দোহারে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১০ শ্রেণীর ছাত্র খুন
নিজস্ব প্রতিবেদক,
ঢাকার দোহারে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বখাটেদের ছুরিকাঘাতে গুরুত্বর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীম পত্তনদার (১৬) নামে এক কিশোর মারা গেছেন। ২৬ শে ফেব্রুয়ারী শনিবার দুপুর ১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শামীম।
শামীম দোহার উপজেলার নয়াবাড়ি ইউনিয়নের আন্তার চক এলাকার মোঃ ইয়ার আলী ছেলে। এবং বাহ্রা হাবিল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেনীর ছাত্র। গত ১০/১১ দিন আগে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাতুড়ি পেটা ও ছুরিকাঘাত করে স্থানীয় বখাটেরা।
স্থানীয়রা জানান, ১৫ ফ্রেব্রুয়ারী উপজেলার নুরুল্লাহপুর ওরসের বাঁশ নাচানোকে কেন্দ্র করে কার্তিকপুর এলাকার সোহরারের ছেলে মো. আলীর (২০) সাথে কথা কাটাকাটি হয় শামীমের। পরের দিন ওরসের মেলা থেকে সন্ধ্যার পর শামীম তার ফুফাতো ভাই ওমর ফারুকের সাথে বাড়িতে যাওয়ার সময় মেলার গেটের সামনে প্রতিপক্ষ আলী, ইস্রাফিল, সুমন ও রাতুলের নেত্বত্বে ১০/১২ জনের একটি কিশোর গ্যাং হাতুড়ি ও ছুরি দিয়ে একাধিকবার আঘাত করে পালিয়ে যায়। গুরুত্বর আহত অবস্থায় শামীমকে দোহার উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। ১০ দিন হাসপাতালের আই,সি,ইউতে চিকিৎসাধীন থাকায় অবস্থায় শনিবার দুপুর ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
শামীমের ফুপাতো ভাই ওমর ফারুক জানান, মেলায় বাঁশ নাচানো নিয়ে শামীমের সাথে আলীর কথা-কাটাকাটি হলে উপস্থিত সকলে তাদের মিলিয়ে দেয়। কিন্তু পরের দিন মেলা থেকে বাড়ি ফেরার সময় মেলার গেটের কাছে আসলে আলী, রতন সহ অনেকগুলো ছেলে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করতে থাকে এবং ছুড়ি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে শামীমকে ধরে আমি দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই। সামান্য বিষয়ে আমার ভাইকে যারা হত্যা করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই।
ঘটনার সময় উপস্থিত কুসুমহাটি ইউনিয়নের কালু মেম্বার জানান, আমি ঘটনাস্থলের একটু পাশেই ছিলাম। দেখি হঠাৎ অনেকগুলো ছেলে এসে শামীম নামের এই ছেলেকে মারধর করছে। আমি এগিয়ে গিয়ে ওদের থেকে ছাড়িয়ে দ্রুত ওর ভাইয়ের সাথে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই।
রবিবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে শামীমের মরদেহ আন্তা এলাকায় নিজ বাড়িতে আনা হয়। শামীমের মরদেহ দেখতে হাজার হাজার মানুষ সেখানে জমায়েত হয় এবং কান্নায় ভেঙ্গে পরে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ও সেখানে উপস্থিত হয় উপস্থিত সকলে তখন শামীমের হত্যাকারীদের ফাঁসি চায়।
এসময় ঢাকা জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ শাখাওয়াত হোসেন নান্নু বলেন, অপরাধীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হওয়া দরকার যাতে এরকম ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটে। আমরাও শামীমের পরিবারের পাশে থাকবো সঠিক বিচার পাইয়ে দিতে।
নিহত শামীমের মা ও বাবা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার বাজানরে যারা খুন করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই। আমরা আর কিছু চাই না শুধু খুনীদের ফাঁসি চাই।
এঘটনায় ২০শে ফেব্রুয়ারী শামীমের চাচা হযরত আলী পত্তনদার দোহার থানায় ৬জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন। উল্লেখিত আসামীরা হলেন, সুন্দরীপাড়া গ্রামের সোহরাবের ছেলে আলী(২২), চর কুশাই চর গ্রামের ইউসুফ খানের ছেলে ইস্রাফিল, একই গ্রামের আদারির ছেলে রাতুল ও চুন্নুর ছেলে সুমন(২২), চর কুশাই চর গ্রামের আরেক রাতুল(২২), কার্তিকপুর গ্রামের আয়নালের ছেলে আল আমীন(২৩)।
এবিষয়ে মামলার আয়ু এসআই এনামুল হক বলেন, আমরা আসামীদের ধরার চেষ্টা করছি। সবাই পলাতক আছে। দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার করতে পারবো।
দোহার থানার ওসি মোস্তফা কামাল জানান, ঘটনার দু একদিন পরেই মামলা করেছে শামীমের পরিবার। আসামীরা সবাই পলাতক। দোহার থানা পুলিশ কাজ করছে, দ্রুত আসামীদের ধরে আদালতে প্রেরণ করা হবে।